আবেগ ও বাস্তবতা

প্রায় দুই বছর চুটিয়ে প্রেম করার পর মাস ছয়েক আগে যখন তারা দুই
পরিবারের সম্মতিতে বিয়ে করলো, আমরা বেশ এনজয় করেছিলাম । বন্ধুটি ACCA করে বেশ ভালো বেতনেই একটা কর্পোরেট জব করছে মতিঝিলে। মেয়েটি গ্রাজুয়েশনের শেষ পর্যায়ে ।
.
দুই পরিবারের আর্থিক-সামাজিক অবস্থান, তাদের উপার্জন মিলিয়ে বেশ স্বাচ্ছন্দে কেটে যাবার কথা । বিয়ের কয়েক মাস পর্যন্ত বেশ আমোদেই কেটেছে ..... কিন্তু ইদানিং নাকি সম্পর্কটা সুতোর উপর ঝুলছে!
.
কারণ ..মেয়েটি 'এ্যাডজাস্ট' করতে
পারছেনা !!!!!!!

বন্ধুটি বেশ আক্ষেপ করে ফোনে আমাকে বলছিল -
'কোনদিন এই দিনটার কথা কল্পনাও করিনি। প্রেম করার দিন গুলোতে মনে হতো সারাজীবন একে অপরকে সহ্য করবার মত ভালোবাসাটুকু দু'জনার আছে। কিন্তু ... আজ মনে হচ্ছে আসলেই
''প্রেমের বিয়ে বেশিদিন টেকেনা" .....!!!
.
প্রেম'টা যতই গাঢ় হোক না কেন ,
তাতে একটা ফাঁক সবসময়ই থাকে । সেটা
'দেখনদারী' দিয়ে ঢেকে রাখা হয় ।
.
কৃত্রিমতা দিয়ে 'বাস্তবতা' আড়াল
করার চেষ্টা ।
.
মেয়েটা কড়া মেকাপে সদ্য গজিয়ে ওঠা ব্রণগুলো ঢাকে। স্কিনের কালার উজ্জ্বল করে। বেছে বেছে সবচেয়ে ভালো জামাটা গায়ে দিয়ে ডেটিং এ যায় । খাবারে বাছ-বিছার করে... গুছিয়ে কথা বলা.. আসল 'আমি'কে গোপন করে আরেকটা ''আমি''র খোলস !!! বিয়ের পর খোলস ছাড়া সেই মেয়েটাকে দেখে ছেলেটার মনে 'দ্বিধা' তৈরী হওয়াটা অমূলক নয় ।
.
বিয়ের আগে ছেলেটি মেয়েটির জন্য দামী গিফট কেনে । দামী রেষ্টুরেন্টের 'দামী বিল'' বেয়ার করে । হাঁটাদুরত্বেও সিএনজি/রিকশা লাগে। রাত জেগে ক্লান্তিহীন ফোনালাপ ... টেক কেয়ার করার পাগলামি ... একনজর দেখার অপেক্ষা .... 'পাগল প্রেমিক' বাস্তবতাকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে যায়।
.
বিয়ের পর কোথাও যেতে সিএনজি তো দূরের কথা পারলে লোকাল বাসই ভরসা।
.
রেষ্টুরেন্টে মাসে একবার যাওয়াটাও
বিলাসিতা। ফোনালাপ...টেক কেয়ার
... অপেক্ষা ... ধুর, ওসব তো
ছেলেমানুষী !!!
.
মেয়েটি এই রুক্ষতার আড়ালেই তার
'পাগল প্রেমিকটিকে' হাতরে খুঁজে।
.
 ...কেবল দীর্ঘশ্বাস জমে বুক ভরাট হয়।
প্রেম'টা ঘাসফুল হয়ে ফোটে .....
ঘাসফড়িং হয়ে উড়ে যায় !!!

Comments

Popular posts from this blog

আমি মোটা

হতাশা বনাম চেষ্টা

বিয়ে পরবর্তী একটি হানিমুনের গল্প