কসাই এর গল্প


উনি একজন ‘মহিলা কসাই”। বিসিএস (স্বাস্থ্য) ক্যাডার তিনি, সরকারী হাসপাতালে ডিউটি করেন অন্য সবার মতো। অবসরে তিনি ভবঘুরেদের দেন এক টাকায় চিকিৎসা।

গত পরশু তাঁকে দায়িত্ব দেয়া হয় এয়ারপোর্টের শ্বাসকষ্টের ভোগা এক ঘরহীন বিধবার। সারাদিন অফিস করে বাসায় ফেরা হয় নি আর, সরাসরি দৌড়াতে হলো ঢাকা মেডিক্যালে। সেখানেই তাঁর ভোর হয়েছে, সারারাত দৌড়াতে হয়েছে টেস্টের জন্য, রোগীর খাবারের জন্য, আর মানুষের কৌতুহল মেটানো – ছিন্ন কাপড়ের এই ভবঘুরে রোগীর সাথে তাঁর কি সম্পর্ক, তাঁর কি স্বার্থ?

ময়লা প্লাটফর্মে শুয়ে শুয়ে ময়লার আস্তরণ পড়েছে রোগীর দেহে, গন্ধে তার কাছে আসতে চায় না কেউ। হাসপাতালে গোসল করানোর সুযোগ থাকলেও কেউ টাকার বিনিময়েও তাঁকে গোসল করাতে চায় নি। অবশেষে সে ডাক্তার এগিয়ে গেলো, নিজের হাতে দীর্ঘ সময় ব্যয় করে রোগীকে রূপ দিলেন শুদ্ধতার, আর নিজে নিলেন আত্মার পরিশুদ্ধি।

“লোক দেখানো” ভাবার দরকার নেই, গত দুই মাসে এই ডাক্তার ইতিমধ্যে দেড় হাজারের বেশী রোগী তিনি সার্ভ করেছেন উত্তরবঙ্গ থেকে শুরু করে নাইক্ষ্যংছড়িতে। পথে পথে শিশু আর বৃদ্ধদের চিকিৎসার পাশাপাশি নখ কেটে দেন, পরিস্কার করে দেন ময়লা শরীর।

পোস্ট দেয়া হয় না সস্তা বিজ্ঞাপনের তকমার ভয়ে। আজ শেয়ার করলাম আপনাদের মুখে তালা দিতে। সমাজের নামে “গেলো গেলো” বলে যারা নাক ছিটকাচ্ছেন, তাঁরা নিজেরা কি করছেন এই সমাজের জন্য, চাকরী আর সংসার বাদে?

দেশে ভালো কাজ হয়, যা আপনার সংকির্ণ চোখে ধরা পড়বে না। ধরা পড়লেও লোক দেখানো বলে নিজের নির্লিপ্ততাকে জাস্টিফাই করে খায়েশ মেটাবেন, আর হতাশ করবেন নতুন প্রজম্মকে।
তারুণ্যের এসব গল্প প্রচার পাবে না, কারণ এতে নোংরামি নেই


তথ্য ও ছবি, ডা.নেসার আহমেদ এর ফেইসবুক পেইজ থেকে।

Comments

Popular posts from this blog

আমি মোটা

হতাশা বনাম চেষ্টা

বিয়ে পরবর্তী একটি হানিমুনের গল্প